প্রভাত সংবাদ ডেস্ক : লিওনেল মেসির যাদুর চমকে ইকুয়েডরকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। ফ্রি কিক থেকে গোল এবং বাকি দুটো গোলের যোগান দিয়ে জয়ী হওয়া দলের নায়ক মেসিই।
ম্যাচের শুরুটা মোটেও মনমতো হয়নি লিওনেল মেসির। তবে শেষটা যেভাবে করেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, তাতে মোটেও খেদ থাকার কথা নয় মনে। দুটো গোলের যোগান দিলেন, শেষে করলেন ফ্রি কিক থেকে চমৎকার এক গোল।
প্রথমার্ধেই দলকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। ২২ মিনিটের মাথায় গোলের সামনে ইকুয়েডরের গোলরক্ষককে হারনান গালিন্দেজ একা পেয়েও বারে মারেন তিনি। নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
২ মিনিটের মধ্যেই আক্রমণে উঠে আসে ইকুয়েডর। ঝেগসন মেন্ডেজের জোরালো শট বাঁচিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
দুই দলই একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে, কিন্তু বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় বার বার। কখনও বল বাইরে মারে, কখনও গোলরক্ষকের হাতে জমা পরে আবার কখনও উড়ে আসা ক্রসে পা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। প্রথমার্ধ যখন গোলশূন্য ভাবেই শেষ হবে বলে ধরে নিয়েছিলেন সমর্থকরা, তখনই দুই দলের মধ্যে তফাৎ গড়ে দেন আর্জেন্টিনার রড্রিগো ডি পল।
৪০ মিনিটের মাথায় মেসির বাড়ানো থ্রু বলে ইকুয়েড দলের রক্ষণ কেটে যায়। সেই বল ছিল গঞ্জালেসের উদ্দেশে। কিন্তু গঞ্জালেস সেই বলকে দিশা দেখাতে পারেননি। তাঁকে আটকাতে উঠে আসেন গোলরক্ষক গালিন্দেজ। ফের বল চলে আসে মেসির পায়। এ বার তিনি খুঁজে নেন ডান প্রান্ত দিয়ে উঠে আসা ডি পলকে। গোল অরক্ষিত রেখে উঠে যাওয়া গালিন্দেজ ফিরতে পারেননি। প্রায় ফাঁকা গোল বল ঢুকিয়ে দেন ডি পল।
ওই গোলের পরেই যেন বাঁধ ভেঙে যায় ইকুয়েডর রক্ষণে। আক্রমণ বাড়তে থাকে মেসিদের। ৪৫ মিনিটের মাথায় ফের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। এ বার সুযোগ নষ্ট করেন গঞ্জালেস। মেসির ফ্রি কিকে মাথা ছোঁয়ান তিনি। প্রস্তুত ছিলেন গালিন্দেজ। আটকে দেন সেই আক্রমণ। ফিরতে বলে ফের শট নেন গঞ্জালেস। এ বারেও ইকুয়েডরের পরিত্রাতা গালিন্দেজ।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার হাতে মেসি
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ে ইকুয়েডরের। একের পর কর্নার পায় তারা। আর্জেন্টিনার রক্ষণে চাপ তৈরি করতে থাকে। যদিও গোলের মুখ খুলতে পারেনি। মেসি এবং দি মারিয়ার যুগল বন্দিতে আক্রমণের ঢেউ ওঠে ইকুয়েডরের বক্সে। বক্সের বাইরে থেকে মারা মেসির শট অল্পের জন্য বাইরে না গেলে ২-০ হয়ে যেত ৭৩ মিনিটের মাথায়।
ইকুয়েডরের রক্ষণের ভুলে ২-০ করে আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষকের বাড়ানো বল তাকেই ফিরিয়ে দিতে গিয়েছিলেন ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পিয়েরো হিনক্যাপি। তাড়া করেন মেসি এবং মারিয়া। বলের দখল নেন মেসি। বল বাড়িয়ে দেন মার্টিনেজের উদ্দেশে। সেই বল গোলে ঠেলতে ভুল করেননি তিনি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আর্জেন্টিনা।
মারিয়া এবং মেসির জুটিকে আটকাতে তখন নাভিশ্বাস উঠছে ইকুয়েডর রক্ষণে। বক্সের মাথায় মারিয়াকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করেন হিনক্যাপি। লাল কার্ড দেখেন তিনি। ফ্রি কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি মেসি।
এই ম্যাচের পারফর্ম্যান্সের ফলে কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ গোলদাতা তো বটেই, সর্বোচ্চ যোগানদাতার তালিকাতেও শীর্ষে উঠে এসেছেন মেসি। এ ম্যাচ শেষে গোল আর অ্যাসিস্ট, দুই খাতাতেই ৪টি করে গোল জমা হয়েছে ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর।
সেমিফাইনালে এবার মেসিদের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া, যারা দিনের শুরুর ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে উরুগুয়েকে বিদায় করে এসেছে শেষ চারে। আগামী বুধবার সকাল সাতটায় যে ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
পা/টু