প্রভাত সংবাদ ডেস্ক : করোনার ভয়ে যখন পুরো দেশ আতঙ্কে, তখন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও। গত ছয় মাসে যে পরিমাণ আক্রান্ত ছিল, সেটি গত ১৫ দিনে দ্বিগুণ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি সামনে আরো ভয়াবহ হতে পারে। যে কারণে এখনই ডেঙ্গু রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের ১৬ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে জুন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩৭২ জন, আর শুধু জুলাই মাসের এই ১৫ দিনেই ৬৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। যা ছয় মাসের আক্রান্তের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।
গতকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৩১৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৬৩ জন। আর ডেঙ্গু সন্দেহে দুই জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে ডেঙ্গুতে মৃত্যু কি না তা নিশ্চিত হতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার রোগীই বেশি আসছে হাসপাতালে। এদিকে দুই সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু দমনে চিরুনী অভিযান শুরু করেছে। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু ডেঙ্গু বাড়লেই অভিযান চালালে হবে না।
এ বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। লোক দেখানো অভিযান চালালেই শুধু হবে না। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হওয়ার আগে থেকে পরিকল্পনা করে কাজ না করলে প্রতি বারই এই সমস্যা থেকে যাবে।
ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা জন্ম নেয় জমা পানিতে। এজন্য নগরবাসীরও দায়িত্ব অনেক। তাদের সচেতন হতে হবে। আমরা নগরবাসীকে সতর্ক করতে ও ডেঙ্গু দমনে চিরুনী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, বৃষ্টিপাতের কারণে ঘরের ভেতরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই এডিস মশা জন্মায়। ঘরের বাইরে ডাবের খোসা, নির্মাণাধীন ভবন, বিভিন্ন খালের জমা পানি, ঘরের ভেতরে খালি পাত্রে জমে থাকা পানিতে এ মশা জন্ম নিয়ে ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই চার মাসকে ডেঙ্গুর মূল মৌসুম ধরা হয়।
ই/ফা